বাহাদুর ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রে আর লকডাউনের প্রয়োজন হবে না বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের করোনা মহামারি উপদেষ্টা ডা. অ্যান্থনি ফসি। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ভ্যাকসিন শিগগিরই আসবে বলে বৃহস্পতিবার আশাপ্রকাশ করেন দেশটির এই শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ। আগের দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বলেছেন, করোনা সংক্রমণ বাড়লেও আর লকডাউনে যাবে না তার দেশ। খবর বিবিসি ও এএফপির।
বিশ্বে করোনা সংক্রমিত দেশের তালিকায় সবার শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২২ লাখ ৬৩ হাজারের বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রাণহানি এক লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত নিউইয়র্কে সংক্রমণের গতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস ও ফ্লোরিডাসহ কিছু অঙ্গরাজ্যে সংক্রমণের হার এখনও বাড়ছে। তা সত্ত্বেও আর লকডাউন দেওয়ার পক্ষে নয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিসের (এনআইএআইডি) পরিচালক ডা. ফসি বলেন, করোনা ভ্যাকসিনের প্রাথমিক পরীক্ষার ফলাফল আশাব্যাঞ্জক। শিগগিরই বিশ্ব একটি কার্যকর ভ্যাকসিন পাবে, যার মাধ্যমে এ মহামারির অবসান ঘটবে।
কিছু এলাকায় সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আবারও লকডাউনের প্রয়োজন আছে কি না জানতে চাইলে ফসি বলেন, আমি মনে করি না, আমরা আর লকডাউনে ফিরে যাব। তিনি বলেন, ‘যেসব এলাকায় আক্রান্ত ও মৃত্যু বেশি, সেগুলোকে আমরা ভালোমতো নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবছি।’
স্কুল কখন চালু হবে- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেখানে ভাইরাস সংক্রমণ নেই, সেখানে স্কুল খুলে দেওয়া যেতে পারে। তবে যেসব অঞ্চলে এখনও সংক্রমণ চলছে, সেখানে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’
গত কয়েকদিন থেকে বিশ্বজুড়ে করোনা চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসন ওষুধ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। করোনায় এটিকে জীবনরক্ষাকারী প্রথম কার্যকর ওষুধ বলে দাবি করেছেন যুক্তরাজ্যের গবেষকরা।
এ বিষয়ে ডা. ফসি জানান, ডেক্সামেথাসনের পরীক্ষার ফলাফলে তিনি মুগ্ধ। ওষুধটি পরীক্ষায় ভেন্টিলেশনে থাকা কভিড-১৯ রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি এক–তৃতীয়াংশ কমাতে সক্ষম হয়েছে। তবে সংক্রমণের পরপরই রোগীকে এই ওষুধ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এর আগে, গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও জানিয়েছিলেন, করোনা সংক্রমণ বাড়লেও আর লকডাউনে যাবে না যুক্তরাষ্ট্র।
করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে গত মার্চে লকডাউন ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বন্ধ হয়ে যায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। বেকার হয়ে পড়েন লাখ লাখ মানুষ। তবে সংক্রমণের গতি কমানো সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, অর্থনৈতিক সংকট, সবশেষ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের জেরে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তায় রীতিমতো ধস নেমেছে। তাই আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে লকডাউনের ঝুঁকি আর নিতে চান না ট্রাম্প।
টি.কে ওয়েভ-ইন